মেটে- গিলের মহব্বত

অনুসূয়া কোটাল,

উজ্জয়িনী, মধ্য প্রদেশ

নমস্কার বন্ধুরা অনুসুযার রান্নার পাঠশালাতে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। বন্ধুরা সানডে মানে প্রায়ই বাঙ্গালীদের ঘরে মাটন নয়তো চিকেন হতেই থাকে। এই সানডে তে আমার হাজব্যান্ড বলল "আমি বাজার থেকে চিকেন নিয়ে আসব"। কিন্তু অনেকটা বেলাতেই ও আমাকে হঠাৎ করে বলল যে "আমার অফিসের কাজ আছে তাই আমি আজকে মার্কেটে যেতে পারবো না। তাই বাড়িতে যা আছে তুমি সেটাই রান্না কর"। কিন্তু দিনটা যেহেতু সানডে তাই আমারও খুব একটা ভালো লাগছিল না অন্য কিছু খেতে, চিকেন বা মাটন কিছু একটা খাওয়ার জন্য খুবই মন চাইছিল। কিন্তু কি করব বাড়িতে মাটন চিকেন দুটোর মধ্যে কোনটাই ছিল না। ফ্রিজ খুলে দেখলাম কিছুটা পরিমাণ মেটে আর কিছুটা পরিমাণ গিলে (চিকেন লিভার এন্ড গিজার্ড) রাখা আছে। অনেকটা বেলাও হয়ে গিয়েছিল ,তাই আমি ওই গিলে আর মেটে দিয়ে খুব তাড়াতাড়ি একটা সিম্পল রেসিপি বানিয়ে ফেললাম।। যার নাম দিলাম 'মেটে- গিলের মহব্বত'। সময়টা হাতে খুব একটা বেশি ছিল না কমই ছিল, তাই তাড়াতাড়ি করে আমি এই রেসিপিটা বানিয়ে ফেললাম। বেশিক্ষণ ধরে ম্যারিনেশন করে রাখার মত সময় ছিল না। তাই সবজি কাটতে কাটতে পাঁচ মিনিটের মতো মেরিনেশন করে রেখে দিয়েছিলাম। তাই বন্ধুরা সময় নষ্ট না করেই ঝটপট করে সেই রান্নাটা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে নিচ্ছি।

মেটে- গিলের মহব্বত বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী।

নম্বর ১- ২৫০গ্রাম মেটে এবং ২৫০গ্রাম গিলে
নম্বর ২- দুটি বড় পেঁয়াজ খুব মিহি করে কোঁচানো
নম্বর ৩- এক টেবিল চামচ আদা বাটা আর এক টেবিল চামচ রসুন বাটা।
নম্বর ৪- দুটি শুকনো লঙ্কা, দুটি ছোট এলাচ, দুটো লবঙ্গ,
ছোট এক টুকরো ডাল চিনি,
একটি তেজপাতা, পাঁচটি গোটা গোলমরিচ।
নম্বর ৫- এক চামচ চিকেন মাসালা ।
নম্বর ৬- ১/২ চামচ হলুদের গুঁড়ো।
নম্বর ৬- এক চামচ কাশ্মীরি লাল লঙ্কার গুঁড়ো এবং হাফ চামচ শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো।
নম্বর৭- স্বাদ অনুসার লবণ।
নম্বর ৮- অল্প একটু ধনেপাতা কুচি।
নম্বর ৯- এক চামচ টক দই


*রান্নাটা অবশ্যই সরষের তেলে করতে হবে।

রান্নার পদ্ধতি-

প্রথমে মেটে এবং গিলে গুলো পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে এবং জল ঝরিয়ে নিতে হবে। এইবার এর মধ্যে এক চামচ টক দই, অল্প একটু পরিমাণ হলুদ গুঁড়ো, অল্প একটু পরিমাণ শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো, একটু কাশ্মীরি লাল লঙ্কার গুঁড়ো , এক চামচ আদা রসুন বাটা,অল্প একটু পরিমাণ সর্ষের তেল দিয়ে মিনিট পাঁচেকের জন্য ম্যারোনেশন করে নিতে হবে। এইবার কড়াইটা ভালো করে গরম হয়ে গেলে এর মধ্যে কিছুটা সরষের তেল দিতে হবে।। যখন তেল ভালোভাবে গরম হয়ে যাবে তখন এর মধ্যে একে একে গোটা গরম মসলা, তেজপাতা, গোটা শুকনো লঙ্কা দিয়ে দিতে হবে। তারপর এর মধ্যে একটু আদা রসুনের পেস্ট দিতে হবে, যখন আদা রসুনের কাঁচা গন্ধটা চলে যাবে এবং একটা সুন্দর গন্ধ বের হবে তখন এর মধ্যে কুচানো পেঁয়াজটা দিয়ে দিতে হবে। পেঁয়াজটা ভালো করে ভাজা হয়ে গেলে এর মধ্যে ম্যারিনেট করা মেটে আর গিলেটা দিয়ে দিয়ে মিডিয়াম আঁচে ভালো করে নাড়াচাড়া করতে হবে। নাড়াচাড়া করার পর কিছুক্ষণের জন্য ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে। তারপর ঢাকনাটা খুলে ওর মধ্যে পরিমাণ মতো লবণ অল্প একটু পরিমাণ চিকেন মাসালা এবং অল্প একটু পরিমাণ কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে আবার ভালো করে নাড়াচাড়া করে আরো একটু ঢেকে রাখতে হবে। এইবার ঢাকনা খুলে এর মধ্যে অল্প পরিমাণ জল দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করে আবারো কিছুক্ষনের জন্য ঢেকে রাখতে হবে। তারপর ঢাকনা খুলে উপর থেকে ধনিয়া পাতার কুচি ছড়িয়ে দিয়ে আরো কিছুক্ষণ ঢাকা দিয়ে গ্যাসটা বন্ধ করে দিতে হবে।

এই রান্নাটা ভাত লুচি রুটির সঙ্গে খেতে খুব ভালো লাগে। আমরা অবশ্য সেদিন সবাই দুপুরবেলাতে ভাত দিয়েই খেয়েছিলাম। আমার হাজব্যান্ড এবং ছেলে বলেছিল রান্নাটা খুব ভালো লেগেছে। তাহলে বন্ধুরা আপনারাও এই রেসিপিটা অবশ্যই বাড়িতে চেষ্টা করবেন খুব তাড়াতাড়ি এই রান্নাটা হয়ে যাবে এবং কেমন লেগেছে কমেন্ট করতে কিন্তু একদমই ভুলবেন না। তাহলে আজকের এই পর্যন্ত

ধন্যবাদ।