পোষ পাবনের স্মৃতি

অনিন্দিতা গুড়িয়া,

নিউ-দিল্লি

হারিয়ে গেছে ছেলেবেলার পোষ পাবনের মজা,
উঠোনজুড়ে পড় দেওয়া আর মিষ্টি তিলে খাজা।
কুয়াশা ধূসর ভোরের বেলা ফুল চুরি গাছে চড়া,
করতে জোগাড় ধানের ছড়া আর কুল জোড়া জোড়া।
সরষে ফুল খেসারি ফুল ঝাউ ডাল লাউপাতা
দেওয়া হতো সারা উঠোনে গোবর গুলে নেতা।
সকাল সকাল মকর স্নান আলপনার ঘটা,
শুভ লক্ষ্মীর পদচিহ্ন দিয়ে চালের বাটা।
আঁকা হতো জোড়া বলদ লাঙল কাস্তে ঝোড়া,
গর্ত পাশে যম বুড়ি গোবর দিয়ে গড়া।
পুজোর শেষে যম গর্তে জল দেওয়ার বেলায়
আমাদের সবার নাম নিতো মা মঙ্গল কামনায়।
করতেন মা কত রকম পায়েস পিঠে পুলি,
খেতাম কত মজা করে আমরা সবে মিলি।
আশকে পিঠে ভাপা পুলি কলাই রস বড়া
পাটিসাপটা দুধের পুলি পায়েসে ভরা কড়া।
পাতলা নরম সরু চাকলি সাথে খেজুর গুড়,
ভাজা পিঠে বড়ই স্বাদের গন্ধ ভুর ভুর।
এ বাড়ির পিঠে ও বাড়িতে যায় ও বাড়ি থেকে ও আসে,
আদানে প্রদানে পাড়া প্রতিবেশী একাকার মিলেমিশে।
আলপনা আঁকা গাঁদা ফুলে সাজা তুলসী মঞ্চ উঠান-
পোঁ পোঁ করে বাজে পূজার শঙ্খ আজও দেয় যেন টান।
দূর প্রবাসে সেদিনগুলো বড্ড মনে পড়ে,
মধুর সেদিন শুধুই আছে স্মৃতির পাতা জুড়ে!